ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) সংসদীয় আসনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) নৌকার পক্ষে একটি বৈঠক শেষে হাতভর্তি টাকা নিয়ে নারীদের মধ্যে বিতরণ করতে দেখা যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলামকে। টাকা বিতরণের সেই ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম মো. শামসুদ্দিন। এ ঘটনায় বেশ তোপের মুখে পড়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার ত্রিশাল পৌর সভার দরিরামপুর নিজ বাসার পাশে স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারীদের নিয়ে বৈঠক করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম মো. শামসুদ্দিন। সেই বৈঠকে এলাকার কিছু জ্যেষ্ঠ মানুষও ছিলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সঙ্গে সভাটিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম মন্ডলও উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকার প্রার্থী রুহুল আমীন মাদানীকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে সভার আয়োজন করা হয়।
এরপর সেই সভার কিছু ছবি ও ভিডিও নিজের ফেসবুকের প্রকাশ করেন আবুল কালাম। সেখানে দেওয়া একটি ছবিতে দেখা গেছে, নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। তার পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলামের হাতে টাকা। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নারীরা। সেখানে নৌকার ভোট কিনতে নারীদের মাঝে টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজনেরা।
টাকা বিতরণ সম্পর্কে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ‘মুড়ি খাওয়ার জন্য দিতেই পারি।’ পরক্ষণেই বলেন, ‘টাকা কেন্দ্র খরচ বাবদ দেওয়া হয়েছে। ভোট হলো ৭ জানুয়ারি, এত আগে কেউ ভোট কেনে এই দেশে?’
ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম মো. শামসুদ্দিন বলেন, ‘টাকা বিতরণের বিষয়টি আমি লক্ষ করিনি। গরিব মানুষ হয়তো ওষুধ ও চিকিৎসার জন্য আসায় ৫০ টাকা ১০০ টাকা দেয়। কিন্তু ভোটের জন্য আমরা টাকা দিচ্ছি না।’
এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘আইনগতভাবে কোন প্রার্থী বা প্রার্থীর এজেন্ট ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ করতে পারবে না। ভোট কেনার কোন সুযোগ নেই। এরকম কোন প্রমাণ মিললে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে।’
ত্রিশাল সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী। তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন মাদানী। বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ত্রিশাল পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবিএম আনিছুজ্জামান। ট্রাক নিয়ে নৌকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। এ দুই প্রার্থী ছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আবদুল মজিদ ও তৃণমূল বিএনপি থেকে ড. আবদুল মালেক ফরাজী প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু আলোচনায় বর্তমান এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিছ।