কক্সবাজারে হিমেল হাওয়া খেতে এসে সর্বস্ব হারালেন ৫ পর্যটক
কক্সবাজারের ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ের আনুমানিক ৫০০ফুট দুরত্বে সৈকতের ছাতা মার্কেট এলাকায় অস্ত্রের মুখে ৫ পর্যটকের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারিরা। ভোরে বাস থেকে নেমেই সৈকতের সান্নিধ্য নিতে এসে এ অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন কুমিল্লা থেকে আসা তরুণ ৫ পর্যটক। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) শীতের সকালে এঘটনাটি ঘটে। আর ঘটনায় জড়িত দুইজনকে রাত ১২টার দিকে গ্রেফতার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ, এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ।
গ্রেফতাররা হলো, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা হামিদ ওসমানের ছেলে নুর কামাল (১৯) ও কবির মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম (১৮)। অন্যরাও শনাক্ত, শীগগিরই আইনের আওতায় আসবে তারাও।
ছিনতাইয়ের শিকার পর্যটকরা হলেন- কুমিল্লার ২০নং সিটি ওয়ার্ড ডিসামন এলাকার মোমিন মিয়ার ছেলে আসিফ মিয়া (২২), একই এলাকার সাজু মিয়ার ছেলে সায়মন (১৮), মো. ইমাম মিয়ার ছেলে সুমন (২০), সোহাগ মিয়ার ছেলে মো. হৃদয় (২০) ও ইয়াছিন (৩৩)।
ছিনতাইয়ের শিকার আসিফ বলেন, আমরা রাতের বাসে কুমিল্লা থেকে উঠে সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে কক্সবাজারে বাস থেকে নামি। এরপর সকালের হিমেল হাওয়া খেতে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে যায়। সেসময় ৫-৬ জন অস্ত্রধারী আমাদের ঘিরে ধরে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ভয় দেখিয়ে মুঠোফোনসহ সাথে থাকা সবকিছু দাবি করে। আঘাতের চেষ্টা করছে দেখো ভয়ে আমরা ৫জনের ফোন, নগদ টাকাসহ সব নিয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত হবার পর অন্যজনের সহায়তায় ফোন করার প্রায় এ ঘন্টা পর ট্যুরিস্ট পু্লিশ ঘটনা স্থলে আসে বলে অভিযোগ করে আসিফ বলেন- ঘটনার পর পর স্থানীয়দের সহায়তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের নাম্বারে কল করি। কিন্তু তারা আসে প্রায় এক ঘন্টা পর। ততক্ষণে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
সৈকতের ছাতা মার্কেট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ৫ পর্যটক সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে আসে। ছাতা মার্কেট এলাকা দিয়ে সৈকতে যাওয়ার পথে ৬ জনের একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র তাদের ঘিরে ধরে। এসময় ছিনতাইকারীদের হাতে ছুরি, লম্বা ধারালো অস্ত্র দেখা যায়। তারা এসময় মোবাইলসহ পর্যটকদের সর্বস্ব লুটে নেয়।
ছাতা মার্কেটের এক দোকানদার বলেন, আমার দোকানের সিসিটিভিতে বিষয়টি ধরা পড়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুটেজ কাউকে সরবরাহ দিতে নিষেধ করা হয়। ৫ জন পর্যটক ছিনতাইয়ের শিকার দুঃখজনক ঘটনা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের এডিশনাল ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছিল। নানা প্রচেষ্টায় রাত ১২টার দিকে দুইজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এরা ঘটনায় সম্পৃক্ত। ভুক্তভোগীরা এদের চিহ্নিত করেছে। এদের স্বীকারোক্তিতে বাকিদেরও ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন অতিরিক্ত ডিআইজি।
তিনি বলেন, কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই সংশ্লিষ্টদের দোষারোপ করা কষ্টের। সবাই মিলে সচেষ্ট হলেই কেবল সমাজ আগাছা মক্ত করা সম্ভব।