চুনারুঘাটে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে কারাগারে প্রেরণ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে নিজ স্কুলের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষক বুধবার বিকালে আদালতে ধর্ষণের ঘটনায় দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কেএম ফজলুল হক কামাল (৪২)। পরে বিকালে আদালতের বিচারক ওই শিক্ষককে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর আগে
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একেএম ফজলুল হক কামালকে ছনখলা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফজুল হক কামাল গাজীপুর ইউনিয়নের ছনখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও একই গ্রামের মো. আমিন আলীর ছেলে। ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ছুটির দিন গত ৬ জুন শুক্রবার নিজ স্কুলের একটি কক্ষে প্রাইভেট পড়াতেন প্রধান শিক্ষক কামাল। তার কাছে পড়তে আসা ১১ ও ১২ বছর বয়সী দুই ছাত্রীকে বিগত অনুমান ৪/৫ দিন পূর্বে প্রতিদিনের মত স্কুল হতে ছুটির পর বাড়ীতে আসে এবং বাড়িতে আসার পর তারা দুই ভিকটিম কান্নাকাটি করে বলে যে, তারা আর ওই স্কুলে যাবে না, তাদেরকে মাদ্রাসায় ভর্তি করার কথা বলে। তখন তাদের পিতা মাতা ও পরিবারের লোকজন তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে স্কুলে কি হয়েছে জানতে চান। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা কাঁদতে কাঁদতে জানায় যে, তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক প্রকাশ কামাল গত ৬ জুন সকাল অনুমান ৯টায় স্কুলে কোচিং করতে গেলে চাচাত বড় বোন ভিকটিমকে তার অফিসে যাইতে বলেন। তখন অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীরা আসেনি। আমার মেয়ে ভিকটিম শিক্ষককের অফিসে গেলে অফিসের বাথরুমের ভিতর নিয়ে ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণ করার পর ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন যে, এই ঘটনার কথা কাউকে জানাইলে ওই ছাত্রীকে লাল কালি দিয়ে স্কুল হতে বের করে দিবেন এবং সে (ভিকটিম) আর কোনোদিন লেখাপড়া করতে পারবে না। এইভাবে চাচাত ছোটবোন অপর ছাত্রীকে ৯ জুন শিক্ষকের অফিসে ডেকে নিয়ে অফিসের বাথরুমের ভেতর ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন এবং উক্ত ঘটনার কথা কাউকে বলিলে তাহাকেও লাল কালি দিয়া স্কুল হতে বের করে দিবে বলে ভয় দেখায়। তাই ওই দুই ছাত্রী ভয়ে কাউকে ঘটনার কথা বলেনি এবং তারা আর স্কুলে যাবে না বলে জানায়।
পরবর্তীতে গত ২৭ জুন ঘটনার বিস্তারিত দুই ছাত্রী তার পরিবারকে জানালে ঘটনা প্রকাশ পায়। ভুক্তভোগীরা পারস্পরিক আত্মীয়। এ ঘটনা এলাকায় প্রকাশ হলে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি। পরে ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর তদন্ত গোলাম মোস্তফা জানান, জবানবন্দি শেষে বিকালে আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।