সেন্ট মার্টিন নিয়ে দুজন এমপি এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের উৎস কী?
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে জাতীয় সংসদে প্রথম বক্তব্য রাখেন রাশেদ খান মেনন। তিনি অভিযোগ করেন যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এই দ্বীপটি নিতে চায়। এর পর একই ধরনের কথা শোনা যায় হাসানুল হক ইনুর মুখ থেকে। তারা দুজনেই বামপন্থী নেতা এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দলের নেতা।
এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি সবচেয়ে বড় হুমকির কথা আমরা জানতে পারি খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। তিনি অবশ্য কোনও দেশের নাম উল্লেখ করেননি। তবে বোঝা যায় যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিই ইঙ্গিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বিক্রির প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন বিরোধী দল বিএনপি কি এই দ্বীপ বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়?
এর পর ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে বলা হয় যে, আমেরিকা কখনো বাংলাদেশের কাছে এই দ্বীপের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে নি। এখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও বলা হলো যে ওয়াশিংটন কখনও এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করেনি। মার্কিন সরকারের একজন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে নিতে চায় এই কথাটি কিভাবে বাজারে এলো? যে দুজন এমপি এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন তাঁরা একসময় এই সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
পরে তারা প্রধানমন্ত্রীর কেবিনেট থেকে বাদ পড়েছেন। এবং বাদ পড়ার পরে তারা সরকারের সমালোচনা করে নানা সময়ে বক্তব্যও দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই বক্তব্যের পর আমরা কি জানতে পারি সংসদের দুজন এমপি এবং খোদ প্রধানমন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এমন কথা বললেন? কারণ এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তাদের এসব বক্তব্যের উৎস কী? এই নেতাদের সঙ্গে কি অন্য কোনো দেশ বা দেশের রাজনীতিক, গোয়েন্দা অথবা কর্মকর্তা সেন্ট মার্টিনের ব্যাপারে আলোচনা করেছে? যদি করে থাকে জনগণ কি সেই তথ্য জানার অধিকার দাবি করতে পারে?
[লেখকঃ সাংবাদিক, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে কর্মরত। লেখাটি ফেসবুক থেকে নেওয়া।]