এলোমেলো সংবাদসর্বশেষ

হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের আহ্বান

আরাফাত ময়দানে পবিত্র হজের খুতবায় বিশ্ব উম্মাহর মঙ্গল কামনাসহ মুসলিম উম্মার ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে। মসজিদে নামিরা থেকে এ বছর হজের খুতবা দিয়েছেন কাবা শরীফের ইমাম ও সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শায়খ ড. ইউসুফ বিন মোহাম্মদ বিন সাঈদ। খুতবায় তিনি বলেন, ‘শয়তান মুসলমানদের মধ্যে ভেদাভেদ কামনা করে। এমন প্রতিটি বিষয়, যাতে ঐক্য বিনষ্ট হয়, তা থেকে দূরে থাকাই বিধান ও কর্তব্য।’

মঙ্গলবার (২৭ জুন) বাংলাদেশ সময় বিকেলে সাড়ে ৩টায় হজের খুতবা শুরু হয়। খুতবায় বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশে খতিব শায়খ ইউসুফ বিন মোহাম্মদ বলেন, ‘আল্লাহ মহান ও প্রজ্ঞাবান। তিনি অনৈক্য ও ভেদাভেদ হারাম করেছেন। পবিত্র কুরআনে ঐক্য ও সংহতির গুরুত্ব সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। ঐক্যের মধ্যেই দুনিয়া ও আখিরাতের সব বিষয়ের সাফল্য নিহিত। মুসলমানদের পরস্পর মিলেমিশে থাকা জরুরি। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যে কুরআনের বিষয়ে অনৈক্য করবে, সে হেদায়াত থেকে দূরে সরে গেল। যদি আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়, তাহলে কুরআন-সুন্নাহর দিকে ফিরে আসতে আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুরআনে কারিমে মুসলমানদের একসাথে মিলেমিশে বসবাস করার হুকুম দেওয়া হয়েছে।’

খুতবায় কাবা শরীফের ইমাম বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আপনারা দুনিয়া ও আখিরাতের বিষয়ে আল্লাহর হুকুম মেনে চলুন। আল্লাহ তায়ালা বিভক্তি ও অনৈক্য হারাম করেছেন। সকল নবী আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিয়েছেন। তিনি এক; ইবাদতে তার উপযুক্ত কেউ নেই। আল্লাহ ছাড়া সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।’

মানুষ সবাই সমান

হজের খুতবায় শায়খ ইউসুফ বিন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের হুকুম দেওয়া হয়েছে- নামাজ পড়ার, জাকাত আদায়ের ও দরিদ্রদের সহায়তা করার। পবিত্র হজও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন। আপনারা আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করুন যেন তিনি আপনাদের দেখছেন। কোনো অনারবের ওপর কোনো আরবের, কোনো আরবের ওপর কোনো অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই।’

‘দিন-রাতের বিবর্তন আল্লাহর অন্যতম এক নিদর্শন। আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে আকড়ে ধরুন। আল্লাহ হুদুদ সংরক্ষণের অর্থ হলো- আমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করব। প্রত্যেক নবী (আ.) এই দাওয়াত-ই দিয়েছেন যে- এক আল্লাহর ইবাদত করো, নামাজ পড়ো, জাকাত দাও। জাকাত ও হজের হুকুম স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছেন।’

গোনাহের কাজে সহযোগী হইয়ো না

খুতবায় খতিব বলেন, ‘উত্তম আচরণের মাধ্যমে অন্যের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া যায়। মুসলমানের জন্য উত্তম চরিত্র অবলম্বন করা জরুরি। পবিত্র শরিয়তের উদ্দেশ্য হলো- মুসলমান একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকুক। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- শিরক করো না। মা-বাবার সঙ্গে উত্তম আচরণ কর। গোনাহের কাজে সহযোগী হইয়ো না। তাকওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করো। শয়তান চায়- মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি হোক। ইসলামে সব শিক্ষা রয়েছে, যা মুসলমানদের এক ও অভিন্ন করে রাখে। শরিয়েতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ঝগড়া-বিবাদকারীদের বোঝানোর জন্য। ইরশাদ হয়েছে– আল্লাহর হুকুম মান্যকারী উম্মাহ এক ও অভিন্ন।

উল্লেখ্য, হজের খুতবা দেওয়া হয়েছে আরবিতে। তবে, অনুবাদ করে তা আরও ২০টি ভাষায় সম্প্রচার করা হয়। ভাষাগুলো হলো- ইংরেজি, ফরাসি, ফার্সি, উর্দু, হাউসা, রাশিয়ান, তুর্কি, বাংলা, চীনা, মালয়, সোয়াহিলি, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ, আমহারিক, জার্মান, সুইডিশ, ইতালীয়, মালয়ালম, বসনিয়ান ও ফিলিপিনো।

আরও সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker